তিনতলা ভবন নির্মাণ শেষে হস্তান্তরের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) কার্যক্রম এখনো চালু হয়নি। সেখানে নেই কোন আসবাবপত্র ও বিদ্যুৎ–সংযোগ। পর্যাপ্ত জনবলও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী বছর থেকে ম্যাটস চালুর সম্ভাবনা আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ে (আরএফএসটি) কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এরপর পূর্ণাঙ্গভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পাঠদানের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে জয়পুরহাট-মোকামতলা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলীতে ম্যাটসের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
কাজটি সম্পন্ন করে ময়মনসিংহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এস এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণ শেষে ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভবনটি তৎকালীন জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ওয়াজেদ আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ২০ জানুয়ারি কে এম জোবায়ের গালিবকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তবে এখনো অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে একটি একাডেমিক ভবন, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পৃথক বাসভবন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য দুটি আবাসিক হল, গ্যারেজ ও অন্যান্য ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতলাল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ভবন ৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাটস বুঝিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, ম্যাটস হস্তান্তরের পর কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। কেউ না থাকায় রাতের বেলায় কয়েক দফায় ম্যাটসে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত চালু করা না গেলে অযত্ন আর অবহেলায় প্রতিষ্ঠানটি নষ্ট হয়ে হবে।
বটতলী এলাকার মিনহাজুল মুকিত বলেন, যদি চালুই করতে না পারে, তাহলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করার কোন প্রয়োজন ছিল না।
ম্যাটসের অধ্যক্ষ কে এম জোবায়ের গালিব বলেন, আমাকে গত জানুয়ারিতে এখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখনো অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আসবাব ও বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক বরাবরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর প্রতিষ্ঠানটি চালু হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাটসে রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন আল মামুন বলেন, ম্যাটস নির্মাণের পর তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে এখন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জানামতে, আপাতত ম্যাটসের কার্যক্রম থাকবে না। রেসিডেনসিয়াল ফিল্ড সাইট ট্রেইনিংয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।